আকিকুর রহমান রুমনঃ হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে সুফিয়া মতিন মহিলা কলেজের শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবরেটরি‘র শিক্ষার্থীদের ব্যাবহারের দুটি ল্যাপটপ কম্পিউটার বাসায় নিয়ে গেছেন অধ্যক্ষ।
এছাড়াও ১০নভেম্বর পরীক্ষা চলাকালে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই ছাত্রদের কাছ থেকে পেপার নেওয়ার ঘটনায় জনাব আলী ডিগ্রী কলেজের ভিতরে এক হঠ্রগোল বাঁধলে পড়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার কাওসার শোকরানার উপস্থিতিতে সময়ে ছাত্রদের মিমাংসার সমাধানের আশ্বাস দিয়ে নিভৃত করা হয়।
ছাত্রদের অভিযোগ পরীক্ষার ৩দিন অতিবাহিত হলেও তাদের রোমে কোন প্রকার সিলিং ফ্যানের ব্যবস্হা করেননি এই পরিক্ষা কেন্দ্রের হল সুপার সুফিয়া মতিন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সোলতান আহমেদ ভূইয়া।
অন্যদিকে আরেক অনুসন্ধানে জানাযায়,কলেজ থেকে দু’টি কম্পিউটার মধ্যে অন্যএকটি ল্যাপটপ দিয়েছেন তার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেকে অপরটি নিজ বাসায় ব্যাবহার করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বানিয়াচং সুফিয়া মতিন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সুলতান আহমেদ ভূইয়ার নানান অনিয়মের অভিযোগে হবিগঞ্জ দুদক উপ-পরিচালক বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেছেন এক শিক্ষার্থীর পিতা মোতাব্বির হোসেন।
৭ নভেম্বর সকাল ১১ টায় হবিগঞ্জ দুদকের উপপরিচালকের কার্যালয়ে অধ্যক্ষ‘র বিরুদ্ধে নানান অভিযোগে লিখিত অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছে।
চলতি এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র আটকিয়ে অতিরিক্ত ক্লাসের নাম করে অতিরিক্ত ১ হাজার টাকা আদায়ের অভিযোগে পরীক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদ্মাসন সিংহ‘র কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
২ নভেম্বর অভিযোগ পেয়ে ইউএনও তাৎক্ষনিকভাবে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।
কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ওই কলেজের গভর্ণিং কমিটির সভাপতি পদ্মাসন সিংহ‘র নির্দেশ না মেনে অধ্যক্ষ পরদিন ৩ নভেম্বর ছাত্রীদের নিকট থেকে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর রেখে প্রবেশপত্র বন্টন করেন।
এরই মধ্যে ৩৩০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৭০ জনের নিকট থেকে ১ হাজার করে আদায় করে পকেটে পুরেছেন। মাত্র ৬০ জন বিনা টাকায় অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করে প্রবেশপত্র নিয়েছেন।
সূত্রে জানা যায়,অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সুলতান আহমেদ ভূইয়া ২০২১ সালে কলেজে যোগদানের পর থেকেই কলেজ গভর্ণিং কমিটি ও শিক্ষকদের পাশ কাটিয়ে একা একা মনগড়া বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
চলতি বছরে অধ্যক্ষ নিজের এমপিওভূক্তির কাজে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে গিয়ে অফিস আদেশ ছাড়াই প্রায় ২ লক্ষ টাকা ভ্রমন বিল উত্তোলন করেছেন।
এ নিয়ে অভিযোগ উঠায় অডিট কমিটি তদন্ত করে এর প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন বলে জানা যায়।
দুদকে করা লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়,চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় সরকার নির্ধারিত ফি‘র চেয়ে তিনগুন বেশি ফি আদায় করেছেন অধ্যক্ষ।
অনেকের কাছ থেকে বেশী টাকা আদায় করে কম টাকার রশিদ প্রদান করেন। তিনি কলেজে যোগদানের পর থেকেই সাপ্তাহিক পরীক্ষা চালু করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিনা রশিদে টাকা আদায় করেন। ম্যানেজমেন্ট ফি একা একাই নিয়ে যান।অনার্সের অভ্যন্তরীন পেপার বিক্রির টাকা নিজেই তুলেন নিজেই নিয়ে যান।
তিনি ছাত্রীদের আইডি কার্ড বাবত জনপ্রতি ১শ ৫০ টাকা নির্ধারণ করে নিজেই তৈরি করেন এবং নিজেই টাকা তুলে নিয়ে যান।
চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় ফরম ফিলাপের জন্য ৩ হাজার ৯শ টাকা নির্ধারণ করে আদায় করেন।যা ম্যানেজিং কমিটি অবগত না।
সহকর্মী শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটিকে না জানিয়ে যখন তখন কলেজের হিসাবরক্ষকের নিকট থেকে টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যান।
এ ব্যাপারে অভিযোগকারী মোতাব্বির হোসেন জানান,আমি একজন শিক্ষার্থীর অভিবাভক হিসেবে আমার দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে অভিযোগ করেছি। উল্লেখিত অভিযোগ ছাড়াও আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে ওই অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে।কতৃপক্ষ চাইলে যেকোন সময় তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিতে পারেন।
এ ব্যাপারে সুফিয়া মতিন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সুলতান আহমেদ ভূইয়া বলেন,যেহেতু তিনি অভিযোগ করে ফেলেছেন তাই আমি আর এসব বিষয়ে কোন কথা বলতে চাইনা।ল্যাপটপ নেওয়ার ব্যাপারে তিনি জানান একজন অধ্যক্ষ একটি ল্যাপটপ এমনিতেই ব্যাবহার করতে পারেন। আমি দুটি ল্যাপটপ নেইনি।
অডিট কমিটির আহবায়ক বিপুল ভূষন রায় বলেন, আমরা শিঘ্রই রিপোর্ট ও সুপারিশমালা গভর্ণিং কমিটির কাছে হস্তান্তর করবো।তখনই আপনারা জানতে পারবেন বিস্তারিতভাবে।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সুফিয়া মতিন মহিলা কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদ্মাসন সিংহ বলেন, কলেজের ম্যানেজিং কমিটি অধ্যক্ষের অনেক সিদ্ধান্ত‘র ব্যাপারেই জানেন না। তিনি নিজে নিজেই অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা আমি সহ কলেজ কমিটির সদস্যরা জানেন না। আমরা আইন অনুযায়ী ব্যাবস্থা নিব।