আকিকুর রহমান রুমনঃ হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে
অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগে জাতীয় দৈনিক দেশবাংলা পত্রিকাসহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয় কলেজ অধ্যক্ষের।
এমনকি এবিষয় নিয়ে ৩রা নভেম্বর বৃহস্পতিবার বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মা সিংহার আশ্বাসে কলেজে শিক্ষার্থীরা সকালে কলেজে যাওয়ার পর কলেজ কতৃপক্ষ তাদের হাতে একটি অঙ্গীকারনামা ধরিয়ে দেন।
এবং তাদেরকে এই অঙ্গীরনামায় দস্তখত করলে বিনা টাকায় এডমিট কার্ড প্রদান করা হবে বলেও জানানো হয়।
এক প্রকার অসহায় ছাত্রীরা জিম্মি হয়ে এবং নিরুপায় অবস্থায় সাক্ষর প্রদান করে কার্ডটি নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে তারা জানান।
কলেজ কতৃপক্ষের হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয় সচেতন মহলে।
অনেকেই তাদের এহেন কাজে শাক দিয়ে মাছ ডাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও মন্তব্য প্রকাশ করতে শুনা যাচ্ছে।
অন্যদিকে এই বিষয়টি কলেজের অন্যান্য পরিক্ষার্থীদের মধ্যে জানাজানি হয়ে পড়লে,তারা তাদের ১হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য দাবী জানান কলেজ কতৃপক্ষসহ সংবাদকর্মী ভাইদের নিকট।
এদিকে তার এমন অনিয়ম দূর্নিতীর অভিযোগে ৬নভেম্বর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুদক বরাবরে একটি অভিযোগ দায়ের করেন ঐ কলেজের এইচএসসি পরিক্ষার্থী এক শিক্ষার্থীর পিতা মুতাব্বির মিয়া।
এসব নিয়ে বিষয় নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে সুফিয়া মতিন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দূর্নিতীর সংবাদ প্রকাশিত হলে কলেজ কতৃপক্ষ গর্ভনিংবডির সভাপতি ও বানিয়াচং উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা পদ্মা সিংহা ৩সদস্য বিশিষ্ট একটি অডিট কমিটি গঠন করা হয়।
এতোকিছুর পরও কতৃপক্ষের তেমন কিছু পদক্ষেপ না দেখে অনেকেই নানান প্রশ্ন তুলেছেন অধ্যক্ষের খুঁটির জোর নিয়েও।
এক অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসতে থাকে এই কলেজ অধ্যক্ষের নানান অনিয়ম দূর্নিতীর অজানা কাহিনী।
কলেজের মধ্যে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের দুটি কম্পিউটার নিয়ে একটি হবিগঞ্জের নিজ বাসায় ব্যাবহার করছেন এবং অন্যটি তার পুত্র ঢাকায় জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ব বিদ্যালয়ে ব্যবহার করে আসছে বলেও সূত্রে জানাযায়।
গত চলতি মাসের গর্ভনিংবডির কলেজ মিটিংয়ে একটি কথা স্বীকার করলেও এখনো ফেরত দেননি তিনি।
এছাড়াও প্রতিদিন হবিগঞ্জ থেকে সিএনজি ভাড়া নিয়ে কলেজেও আসলেও বিল করেন কলেজের নামে।
এমন অনিয়ম দূর্নিতীর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে শত,শত।
উল্লেখ্য,গতকাল ২রা নভেম্বর বুধবার বানিয়াচং উপজেলার সুফিয়া মতিন মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ সুলতান আহমেদ ভূইয়ার বিরোদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে শিক্ষার্থীরা স্ব-শরীর হাজির হয়ে অভিযোগ করে জানান।
ওই অধ্যক্ষ অতিরিক্ত ক্লাসের জন্য ১ হাজার টাকা করে অর্থ আদায়ের জন্য পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র আটক করে দেন।এই বিষয়টি মানতে না পেরে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ জানান।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রতিষ্টানটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদ্মাসন সিংহ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মৌখিক অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে তাদের হাতে প্রবেশপত্র তুলে দেওয়ার জন্য অধ্যক্ষকে নির্দেশ প্রদান করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ পেয়েও অধ্যক্ষ পরীক্ষার্থীদের হাতে প্রবেশপত্র তুলে দেন নাই।
সূত্রে জানা যায়, আগামী ৬ নভেম্বর এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্টিত হইবে বানিয়াচং উপজেলার সুফিয়া মতিন মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করবেন ৩শ ৩০জন শিক্ষার্থী।
৬ নভেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের বেতন পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে।
অথচ আগস্ট মাস থেকে নিয়মিত ক্লাস বন্ধ রয়েছে।কলেজ থেকে কোচিংয়ের জন্য ১ হাজার করে টাকা ধার্য্য করা হলেও কোন অতিরিক্ত ক্লাস না করালেও প্রবেশপত্র আনার জন্য কলেজে উপস্থিত হয়ে পরীক্ষার্থীরা জানতে পারেন অতিরিক্ত ক্লাসের জন্য অতিরিক্তভাবে ১ হাজার করে টাকা দিতে হবে।যারা অতিরিক্ত ১ হাজার টাকা না দিতে পারবে তারা প্রবেশপত্র পাবেন না বলে অধ্যক্ষ সুলতান আহমে ভূইয়া নির্দেশ প্রদান করেছেন।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে অবহিত না করেই অধ্যক্ষ এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও জানা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী জানান,আমাদের পরিবারে ঠিকমত খাবারই পায়না পরিবারের লোকজন।অতিরিক্ত ১ হাজার টাকা আমি কিভাবে দিব আমার জানা নাই।অন্য আরেক শিক্ষার্থী জানান,আমাদের কোচিং বাধ্যমূলক না।এছাড়াও আমাদের পরীক্ষা আরও আগেই হওয়ার কথা ছিল। তবুও আমরা ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বেতন দিয়েছি। আমাদের ক্লাস বন্ধ রয়েছে আগস্ট মাস থেকে।আমাদেরকে কোন রকম অতিরিক্ত ক্লাস করানো হয় নাই।
এ ব্যাপারে সুফিয়া মতিন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সুলতান আহমেদ ভূইয়ার সাথে মুঠোফোনে য়োগাযোগ করার জন্য বারাবর ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।
এ ব্যাপারে সুফিয়া মতিন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সুলতান আহমেদ ভূইয়ার সাথে মুঠোফোনে য়োগাযোগ করার জন্য বারাবর ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।
এ ব্যাপরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদ্মাসন সিংহ বলেন,এই বিষয়টি পরীক্ষাথীরা আমাকে জানিয়েছেন। পরে আমি অধ্যক্ষকে কোন টাকা ছাড়াই প্রবেশপত্র দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
এব্যাপারে ৯নভেম্বর বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মা সিংহ জানান,এই অধ্যক্ষ কাউকে কোনকিছু না জানিয়ে তার মনগড়া ভাবে সবকিছু করে যাচ্ছে।তার ব্যাপারে আইনগত ভাবে ব্যবস্হা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।