স্টাফ রিপোর্টঃ উদ্বোধন শেষে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে পদ্মা সেতু। শনিবার উদ্বোধন শেষে রোববার সকাল ৬টা থেকে সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হয়। সকাল থেকেই যানবাহনের চাপ ছিল সেতুর দুই প্রান্তে। এর প্রভাব পড়েছে রাজধানীতেও।
পদ্মা সেতুতে যান চলাচলের প্রথম দিন কেউ যাচ্ছেন ঘুরতে, উচ্ছ্বাস নিয়ে কেউ রওনা হয়েছেন বাড়ির পানে। এর ফলে রাজধানীর কাকরাইল, চানখারপুল, ওয়ারী ও মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারসহ বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে যানজট।
ঢাকা মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সকাল থেকেই মাওয়া-পদ্মা সেতুগামী যানবাহনের চাপ বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে রাজধানীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের উপরে ও নিচে। যানবাহনের বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের।
সরেজমিনে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে ওঠার প্রতিটি প্রবেশমুখে বাড়তি চাপ দেখা গেছে। দুপুরে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের উপরে দীর্ঘ সময় যানচলাচল ছিল স্থবির।
এর প্রভাবে রাজধানীর মতিঝিল, ওয়ারী, যাত্রাবাড়ি, চানখারপুল, কাকরাইল, প্রেস ক্লাব, গুলিস্তান, মগবাজার ও মগবাজার ফ্লাইওভারে যানবাহনের বাড়তি চাপ ছিল স্পষ্ট।
অন্যান্য দিনের তুলনায় এসব এলাকায় চলাচলরত যানবাহনকে ট্রাফিক সিগনাল পাড়ি দিতে বাড়তি সময় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ঢালে চানখারপুল অংশে প্রাইভেটকারের যাত্রী মুনসুর আহমেদের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বাড়ি বরিশাল, পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়েছে। আমাদের দুঃস্বপ্নের যাত্রায় প্রাণ ফিরছে।
তর সইছে না। পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে বাড়ি যাব, এ কথা ভাবতে পারনি। ঈদের ঝক্কি এড়াতে তাই আগেই পরিবার নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। কিন্তু পদ্মা সেতুগামী যানবাহনের চাপ এখানেই অনুভব করছি। ধানমন্ডি থেকে বুয়েট এলাকা পেরিয়ে যানজটে পড়ি। দেড় ঘণ্টাতেও উঠতে পারিনি মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে।
একই অভিজ্ঞতা শরিয়তপুরগামী মোটরসাইকেলচালক আবুল কালাম তুষারের। তিনি বলেন, বাইকে এক্সপ্রেসওয়ে পেরিয়ে পদ্মা সেতুতে উঠব, সেলফি তুলব, বাড়ি যাব। অন্যরকম এক অনুভূতি নিয়ে রওয়ানা দিয়েছি দুপুর দেড়টায়। কিন্তু মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে আমার মতো অনেকেই যানজটে আটকে আছেন।
ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পদ্মা সেতু দেখতে যাওয়া, সেতু পাড়ি দিয়ে বাড়ি যাওয়া, উৎসুক মানুষ ও যানবাহন বেড়ে যাওয়ার চাপ পড়েছে রাজধানীতে।
যোগাযোগ করা হলে লালবাগ ট্রাফিক বিভাগের ফুলবাড়িয়া জোনের সহকারি কমিশনার সালাহউদ্দিন জানান, সকাল থেকেই বাড়তি চাপ। ফুলবাড়িয়ায় ফ্লাইওভারের নিচে ওপরে উভয় অংশে মানুষ ও যানবাহনের চাপ অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি। চাপ সামলাতে আমাদের মাথা খারাপ হবার মতো অবস্থা। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের চেষ্টার কারণে এখনো ঘুরছে গাড়ির চাকা।
মতিঝিল ট্রাফিক বিভাগের মতিঝিল জোনের সহকারী কমিশনার(এসি) এস এম বজলুর রশিদ বলেন, মাঝেমধ্যে চাপ বাড়ছে, মাঝেমধ্যে কমছে। আমাদের ট্রাফিক সদস্যরা ফ্লাইওভারের ঢালে কাজ করছেন। গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়ছে মূল সড়কগুলোতে।
লালবাগ ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মেহেদি হাসান বলেন, সড়ক স্থবির নয়। তবে প্রচুর প্রেশার সড়কে ও ফ্লাইওভারে। কিন্তু হাঁটা মানুষের চাপই বেশি। তাছাড়া প্রচুর মানুষ মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার ব্যবহার করে বাড়ি যাচ্ছেন, কেউ ঘুরতে যাচ্ছেন পদ্মা সেতুতে। যে কারণে অনেক বেশি চাপ ফ্লাইওভারে। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে আমরা চেষ্টা করছি।
রোববার বেলা ১১টা থেকেই রাজধানীর বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, তেজগাঁও, মগবাজার ফ্লাইওভার, কাকরাইল এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে সড়কে যানবাহনের চাপ।