নতুন কুড়িঁ নিউজঃ বর্ষা আসে, সঙ্গে আসে বন্যা। সেই সাথে শুরু হয় নদীভাঙন। দুর্ভোগের আশঙ্কায় বুক কাঁপে মানুষের। এতে লাখ লাখ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
প্রতি বছরের মতো এ বছরও ধেয়ে এসেছে বন্যা। সেই সাথে শুরু হয়েছে গাইবান্ধার ফুলছড়িতে সর্বনাশা ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন।
প্রায় প্রতি বছর আষাঢ় মাসেই দেশে বন্যার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। প্রথমেই বৃষ্টি ও এ সময়ে ভারত তাদের ফারাক্কার সবকটি গেট খুলে দেয়া হয়। আর উজান থেকে ধেয়ে আসা পানিতে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, করতোয়ার পানি বড়ার সাথে শুরু হয় তীব্র নদীভাঙন। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি।
গতি কয়েেক দিন ধরে ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ও কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নসহ চরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে অন্তত ৬ গ্রামের ফসলি জমি, মসজিদ ও বাড়িঘর। ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ভাঙন আরো বড় আকার ধারণ করার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
উড়িয়া ইউনিয়নের বুক চিরে বয়ে চলেছে ব্রক্ষপুত্র নদ। এতে প্রতি বছরই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, বাড়িঘরসহ নানা স্থাপনা। এ বছরও বর্ষার শুরুতেই এ নদের তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে প্রতিদিনই বিলীন হচ্ছে একরের পর এক আবাদি জমি। এরই মধ্যে রোপণকৃত বিভিন্ন সবজি ক্ষেতের ফসলসহ জমি ভেঙে পড়ছে নদীগর্ভে।
ইতোমধ্যে ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া, উড়িয়া ইউনিয়নের ভূসির ভিটা, উত্তর উড়িয়া, রতনপুর, কালাসোনা, ফজলুপুর ইউনিয়নের পূর্ব খাটিয়ামারী, পশ্চিম খাটিয়ামারী, মধ্য খাটিয়ামারী, সন্ন্যাসীর চরসহ ৬টি গ্রামের অনেকেই তাদের বাড়িঘর সরিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
নদীভাঙন অব্যাহত থাকলে ভূসির ভিটা গ্রামের উড়িয়া কমিউনিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে চলে যাবে।
এই মুহূর্তে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে উত্তর উড়িয়া ও ভূসির ভিটাসহ ৬টি গ্রামই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে আশংকা করছেন এসব গারে বাসিন্দারা। নদী এভাবে ভাঙতে থাকলে এসব গ্রামের বাড়িঘর ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়বে।
এতে হাজার হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।এমনিতেই উড়িয়া ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকার কারণে এলাকার মানুষজন দুর্ভোগে রয়েছে।আর মরার উপর খাড়ার ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই নদীভাঙন। তাই ভাঙনরোধে দ্রত সরকারিভাবে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে জানালেন জনপ্রতিনিধিসহ সকলেই।
এ ব্যাপারে ভুসির ভিটা গ্রামের আবদুল করিম মিয়া বলেন, আমাদের পাশ্বে নদী ভাঙছে। কারণ বালাশি হতে তিস্তামুখ ঘাট পর্যন্ত নদীতে বাঁধ দিয়েছে।
আমাদের এদিকে বাঁধের কাজ করার কথা থাকলেও কাকতালীয়ভাবে এখন পর্যন্ত হয়নি। তাই এহন নদী ভেঙে ভেঙে েআমদের দিকে আসছে। আমাদের মসজিদ, স্কুল, বাড়ি সবই এখন নদীতে নিযে যাবে। এখন আমরা কি করব!
একই গ্রামের বাসিন্দা রহমান মিয়া বলেন, দুই বছর অয় আমি নতুন বাড়ী করেছি। কত কষ্ট করে বাড়ি করছি, এখন বাটিও বেঙে যাচ্ছে। আমার ছয় কাঠা জমির বগেুনের ক্ষেত ভেঙে নদীতে নিয়ে গেছে।
মধ্য উড়িয়ার বছিরন বেওয়া বলেন, ‘হামরা গরিব মানুষ। হামাগোরে ৫ কাডা জমি আছিল। এই জমিডাও নদী নিয়া গেছেগা। হামরা এহন কি কইরা খামু!
উড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা কামাল পাশা জানান, নদী ভেঙে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা নদীগর্ভে চলে গেছে।
এখন অসহায় এলাকাবাসীকে সরকারিভাবে ব্যবস্থা না করলে ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানো যাবে না।
আমি সরকারের কাছে দাবি জানাই, এখানে ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।
ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, আমি ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
একই সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করে এখানে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলেছি। আমি নিজেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি।