নতুন কুড়িঁ নিউজঃ যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা থেকে রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার তাঁকে আটকের পর স্ত্রীর করা নারী নির্যাতনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলায় রফিকুল ছাড়াও তাঁর ভাবি রুমা আক্তারকে আসামি করা হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার ওই নারীর নাম মোছা. শিউলি আক্তার (১৯)। তিনি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের চরশিহারি গ্রামের সাইদুল ইসলামের মেয়ে। মাস ছয়েক আগে নেত্রকোনা সদর উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের ঝগড়াকান্দা গ্রামের মো. লালচান মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর।
যৌতুকের দাবিতে গত শনিবার দিনভর নির্যাতনের পর সন্ধ্যার দিকে স্ত্রী শিউলিকে ঈশ্বরগঞ্জে শ্বশুরবাড়িতে রাখতে যান রফিকুল। শিউলির অবস্থা দেখে এগিয়ে আসেন তাঁর প্রতিবেশীরা। নির্যাতনের ঘটনা জানতে পেরে রফিকুলকে আটক করে তাঁরা পুলিশে সোপর্দ করেন। এ ঘটনায় গতকাল রোববার শিউলি আক্তার বাদী হয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলায় রফিকুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আদালত রফিকুলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নির্যাতনের শিকার শিউলি আক্তারের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁর বাবা সাইদুল ইসলাম একজন রিকশাচালক। রফিকুলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ের সময় বরপক্ষকে এক দফা ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দেন শিউলির বাবা।
শিউলি আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, বিয়ের পর থেকে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুক বাবদ তাঁর বাবার কাছ থেকে খাট, আলনা, শোকেস ইত্যাদি আসবাব দাবি করতে থাকেন। আসবাব না দিলে সেগুলো কেনার জন্য টাকা আনতে চাপ দেন। তখন বাবার অক্ষমতার কথা স্বামীসহ পরিবারের অন্যদের জানান শিউলি। এতেই সবাই তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
শিউলি আক্তার অভিযোগ করেন, ‘শনিবার সকাল থেকে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় আমার স্বামী। মারতে মারতে হাত-পা বেঁধে আমার শরীরে মরিচ গুলানো পানি ঢেলে দেয়। পানি খেতে চেয়েছি, তখন ওই মরিচ গুলানো পানি আমার মুখে ঢেলে দেয়। এরপর পুকুরে ঝাঁপ দিই।’ তাঁর ভাষ্য, মরিচের জ্বলুনিতে অস্থির হয়ে তিনি পুকুরে ঝাঁপ দেওয়ার পর পুকুরপাড়ে লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে থাকেন স্বামী রফিকুল।
উঠতে চাইলেই পিটুনি দেন। সারা দিন নির্যাতনের পর স্বামী তাঁকে নিয়ে বাবার বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জের চরশিহারি গ্রামে যান। বাড়ি পৌঁছার পর মাকে কাছে পেয়ে নির্যাতনের কথা বলেন শিউলি। এ সময় রফিকুল পালানোর চেষ্টা করেন। তখন প্রতিবেশীরা তাঁকে আটক করে থানায় খবর দেন।