আজিজুল হক সানু: হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ডাক্তার ফেরদৌস ইসলামের বিরুদ্ধে প্রতারণার আশ্রয় ও চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে ১৫ মার্চ নবজাতকের পিতা শফিক মিয়া বাদী হয়ে জেলা প্রশাসক ও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায় ,গত ১৩ মার্চ সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮ টার দিকে প্রসব ব্যাথা নিয়ে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে বাহুবল উপজেলার সুন্ড্রাটিকি গ্রামের বাসিন্দা মোঃ শফিক মিয়ার স্ত্রী মোছাঃ খাদিজা আক্তার (৩০) প্রসব ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
পরে প্রায় ১২ টার সময় হাসপাতালের গাইনি ডাক্তার ফেরদৌসী ইসলাম প্রসূতি খাদিজাকে দেখার পর তিনি বলেন তার অবস্থা ভাল না।
ওইকথা জানিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার জন্য একটি রেফারের কাগজ হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেন, যদি সিলেটে যাওয়া সম্ভব না হয় তাহলে হবিগঞ্জের সবুজবাগের ইউনাটেড শিশু জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
কারণ, সদর হাসপাতালের চেয়েও ওই হাসপাতালে চিকিৎসার মান ভাল এবং আমি নিজেই গিয়ে সিজার করে দিয়ে আসবো। পরে প্রসূতির স্বজনরা ইউনাইটেড হাসপাতালে যান। সেখানে ওই হাসপাতালে দায়িত্বরত লোকজন জানায়, ফেরদৌসী ইসলামকে দিয়ে ২০মিনিটের মাঝে সিজার করার কথা বলে।
ভর্তি করে এবং অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করায়। কিন্তু সিজার না করে অপারেশন থিয়েটারে প্রায় দেড়ঘন্টা থাকার পরও কোন সিজারের ব্যবস্থা না করায়। পরে রোগীর স্বজনরা সিজার না করার কারণ জানতে চাইলে তখন তাহারা ডাক্তার আসতে দেরি হবে বলে টালবাহানা করতে থাকেন।
অন্যদিকে প্রসূতির অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। এমনতো অবস্থায় কোন উপায়ন্তর না পেয়ে বিকেল ২টার দিকে হবিগঞ্জের মাদার কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে প্রসূতির স্বজনরা এবং এখানেই তার সিজার করার পর গর্ভে মৃত্যু সন্তান পাওয়া যায়।
ওই সময় দায়িত্বরত চিকিৎসক প্রসূতির স্বজনদের জানান,সিজার করতে বিলম্ব হওয়ার কারণে নবজাতক মারা গেছে।
আরো জানান, প্রসূতিকে বাচিয়ে রাখার সম্ভ্যাবনা মাত্র ১ ভাগ কারণ প্রসূতির খুব বেশি রক্তক্ষরণ হয়েছে।
এই মুহূর্তে তাকে বাঁচাতে গেলে পর্যাপ্ত পরিমান রক্তের ব্যবস্থা করতে হবে। পরবর্তীতে প্রসূতির স্বজনরা বিভিন্ন লোকজনের সহযোগীতায় ৫ থেকে ৬ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে প্রসূতিকে দিলে সে স্বাভাবিক হয়ে যায়।
এ বিষয়ে সদর হাসপাতালে কর্মরত গাইনি বিভাগের ডাক্তার ফেরদৌস ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি ইউনাইটেড হাসপাতালে কখনো রোগী দেখিনা এবং তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন।
ইউনাইটেড হাসপাতালে কর্মরত ওটি ইনচার্জ তাপস গুহর জানান শুধুমাত্র সিজার অপারেশনের জন্য ফেরদৌস ইসলাম প্রায় সময়ই ইউনাইটেড হাসপাতালে আসেন এবং ঘটনার দিনও তার আসার কথা ছিল।