নতুন কুড়িঁ সিলেট নিউজঃ পরিবারের মতামত উপেক্ষা করে গোপনে বিয়ে করেন দুজনে। আদালতের মাধ্যমে বিবাহের অঙ্গীকারনামাও সম্পাদন করা হয়। ভালোই চলছিল দুজনের সংসার। সম্প্রতি স্ত্রী তিনমাসের গর্ভবতী হলে বাচ্চা নিতে আপত্তি জানান স্বামী। গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করতে ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করেন। স্ত্রী রাজি না হওয়ায় বৃহস্পতিবার কৌশলে খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে বাচ্চা নষ্ট করার ওষুধ খাওয়ান। এর কয়েক ঘণ্টা পর স্ত্রীর প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হলে তাকে সিলেট নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার ভয়ে শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন স্বামী। এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন সিলেটের জৈন্তাপুর ট্রাফিকে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল পলাশ গোয়ালা (২৫)।
জৈন্তাপুর ট্রাফিক পুলিশ সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। তাদের বিবাহের অঙ্গীকারনামার কপিও (নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে করা বিবাহ সংক্রান্ত এফিডেভিট) প্রতিবেদকের হাতে পৌঁছেছে। তবে পলাশের ভয়ে মুখ খুলছেন না স্ত্রী।
শুক্রবার তিনি বলেন, খুবই অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে আছি। পরিবারের লোকজন আসতেছেন তারা বিষয়টি দেখবেন। সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর ওই নারী বলেন, তার প্রচণ্ড জ্বর হওয়ায় তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসা নিয়ে চলেও যাচ্ছেন।
জানতে চাইলে পুলিশ কনস্টেবল পলাশ গোয়ালা বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, স্ত্রীর জ্বর উঠেছিল। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। এখন মোটামুটি সুস্থ। হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাচ্ছি। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিয়ে করেছেন কী-না জানতে চাইলে পলাশ ফোন কেটে দেন।
সিলেট নর্থ ইষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেক্রেটারি আব্দুল আউয়াল জানান, বৃহস্পতিবার স্ত্রীকে ভর্তি করিয়েছিলেন তার স্বামী পলাশ। হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের অব্স-৮ নং বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা ডিসচার্জ নিয়ে অন্যত্র চলে যান। তবে কী সমস্যায় ওই নারী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তা সংশ্লিষ্ট ডাক্তার ছাড়া তিনি বলতে পারবেন না বলে জানান আব্দুল আউয়াল।
জৈন্তাপুর ট্রাফিক পুলিশ সূত্র জানায়, হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার রামপুর চা-বাগানের রনজিৎ গোয়ালার ছেলে পুলিশ কনস্টবল/৯১৩ পলাশ গোয়ালা ও মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার চা বাগানের এক তরুণীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি উভয়ের পরিবারকে জানানো হলে সম্মতি মেলেনি। পরে ২০২০ সালে পহেলা সেপ্টেম্বর দুই পরিবারের অমতে দুজনে আদালতের মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন।
চলতি বছরে স্ত্রী তিনমাসের গর্ভবতী হলে বাচ্চা নেওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানান পলাশ। গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করতে ক্রমাগত তাকে চাপ প্রয়োগ করেন। এতে স্ত্রী কোনোভাবে রাজি না হলে কৌশলে গত চারদিন আগে মেয়ের বোনের বাসা থেকে কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে জৈন্তাপুর থানার পাশে একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে আসেন। বৃহস্পতিবার সকালে খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে পলাশ স্ত্রীকে বাচ্চা নষ্ট করার জন্য ওষুধ খাওয়ান।
সূত্র জানায়, স্ত্রীর গর্ভের সন্তান নষ্ট করে তাকে তালাক দিয়ে পরিবারের পছন্দে বিয়ে করার পায়তারা করছেন পলাশ গোয়ালা। সেজন্য খাবারের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে তার স্ত্রীর অমতে গর্ভপাত করান।