শেখ জাহান রনি, মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ দখল- দূষণে অস্তিত্ব সংকটে হবিগঞ্জের মাধবপুরের খাল-নদী। মাধবপুর শহর গড়ে উঠেছে সোনাই নদীর তীরে। এক সময় সোনাই নদী দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য করতেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
জেলরা নদীতে মাছ ধরে জীবন চালাত। চাষীরা নদীর পানি দিয়ে জমি চাষ করত। নদীকে ঘিরেই নদীর পাড়ের মানুষের জীবন জীবিকা ছিল। ভারতের পশ্চিম ত্রিপুরা রাজ্য পাহাড় সোনাই নদীর উৎপত্তি স্থান। দীর্ঘ ৫০ কিলোমিটার বয়ে চলেছে এই সোনাই নদী।
খাস্টি নদী হয়ে মিলিত হয়েছে মেঘনা নদীতে। সেই সোনালী দিনের সোনাই নদী দখল দূষণ এখন মরতে বসছে। ক্রমাগত ভাবে নদী পাড়ের মানুষ ও মাধবপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা নদীর মধ্য বিভিন্ন ময়লা আর্বজনা ও দুষিত পদার্থ ফেলে নদীর পরিবেশ নষ্ট কর ফেলছে। বিভিন্ন স্থানে নদী দখল করে ঘর বাড়ি ও ব্যবসা বানিজ্য গড়ে তোলায় নদী এখন খাল পরিনত হয়েছে।
মাধবপুর পৌরশহর কাটিয়ারা গ্রামের নদী পাড়ের বাসিদা কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ দাস বলেন, আমরা শৈশব দেখছি নদীর গভীরতা ও প্রশস্ত অনেক ছিল। এ নদীতে সব সময় পানি থাকত। দুরের মানুষ ব্যবসা বানিজ্যর জন্য নৌযান দিয়ে মাধবপুরে মালামাল আনা নেওয়া করত। এই নদীর প্রতি মানুষের এখন আগের মতো ভালবাসা নেই। যে যেভাব পারে নদীকে ধ্বংস করে ফেলছে। মাধবপুর সোনাই নদী এই করুন দশা দখল এখন মন খুব কষ্ট লাগ। এখন নদীপাড় দুর্গন্ধর কারণ যাওয়া যায় না।
নদীর প্রতি মানুষের ভালবাসা ও সচেতনা সৃষ্টি না হলে এ নদী এক সময় ভরাট হয় মরে যাবে। মাধবপুর গত কয়েক বছরে ধরে অপরিকল্পিতভাব শিল্প কারখানা গড়ে উঠায় শিল্প বর্জ্য নদীতে মিশে নদী নষ্ট হচ্ছে। নদীকে বাঁচাতে হলে পরিবেশ বান্ধব শিল্প স্থাপন করতে হবে। মাধবপুর সোনাই নদীতে দূষিত পদার্থ ফেলে নদী দূষণ করা হয়েছে।
এখন সোনাই নদীর পাড় দিয়ে হাঁটাচলা কঠিন হয়ে পড়েছে। কাটিয়ারা সোনাই নদীর পাড়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। নদীতে পড়ে থাকা বিভিন্ন বর্জ্যের গন্ধে ছাত্র ছাত্রীরা অস্থিতে পরছে। পরিবশ বিদ আরাফাত জুবায়র তরিৎ বলেন, মাধবপুরের অন্যতম নদী হচ্ছে সোনাই নদী।
এ নদীর পানি বিভিন্ন হাওর ও নালায় পড়ে মাছের প্রজনন ও আবাস হতো। কি এখন এই সোনাই নদীতে গণহারে বিভিন্ন বর্জ্যে দূষিত পদার্থের সংযোগ নদীতে দেওয়ায় এ নদীর পানি কালো হয়ে গেছে।
যে কারণে এখন সোনাই নদীতে মাছ থাকার কোন পরিবেশ নেই। মাধবপুর উপজেলা পরিষদের সাবক ভাইস চেয়ারম্যান শ্রীধাম দাশগুপ্ত বলেন, নদীর জীবন সত্তা রয়েছে। মানুষের যেমন অঙ্গহানি হলে মানুষ ব্যতীত হয় নদীও দূষিত হলে নদী মরে যায়। হবিগঞ্জের মধ্যে এক সময় সোনাই নদী দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্যর ফলে আমাদের সু-দিন ছিল।
কি নদী পাড় বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে উঠায় এখন সোনাই নদী দখল হয়ে গেছে। সোনাই নদীতে বাজার ও গৃহস্থালি বর্জ্য ফেলায় নদীর পানি কালো হয়ে গেছে। সোনাই নদীকে রক্ষা করতে সরকারের দায়িত্বশীল লোকদের যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে। মাধবপুর পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান মানিক জানান, সোনাই নদীর সু-দিন আবার ফিরিয়ো আনতে হব।
সরকারের প্রতি আমাদের দাবি হচ্ছে নদীর সুরক্ষায় সরকারীভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। নদীপাড়ের স্বাভাবিক পরিবেশ যাতে আর নষ্ট না হয় সেজন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। হবিগঞ্জ বাপার সভাপতি অধ্যাপক (অবঃ) ইকরামুল ওয়াদুদ জানান, সোনাই নদীর বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই বাপা’র সেক্রেটারির সঙ্গে কথা বলে আমাদের করণীয় নির্ধারণ করবা।
মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুর আহ্সান বলেন, সোনাই নদীর অতীত ঐতিহ্য ও গৌরব ফিরিয়ে আনতে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।