নতুন কুঁড়ি সিলেট নিউজ: স্ত্রীকে কু-প্রস্তাব দেওয়া বন্ধুকে অপহরণ করে হত্যার অভিযোগে ইউসুফ মোল্লা নামে এক যুবকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। সেইসঙ্গে নিহত ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান। তিনি জানান, নিহত শাহিন মোল্লা বরিশাল নগরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রুপাতলী এলাকার মো. এমদাদুল হক মোল্লার ছেলে।
গ্রেপ্তার ইউসুফ মোল্লা বরগুনার আমতলী থানার কালীপোড়া এলাকার রুহুল আমিন মোল্লার ছেলে।
এ হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার বাকি দুজন হলেন পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলার গন্ডামারি এলাকার রকিবুল ইসলামের ছেলে নাজমুল ইসলাম অমি এবং বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সোনাহার গ্রামের মিজান শিকদারের ছেলে হামিম শিকদার ।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, একই এলাকায় বসবাসের কারণে ব্যবসায়ী শাহিন মোল্লার সঙ্গে গ্রেপ্তার মো. ইউসুফ মোল্লার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কয়েকদিন আগে ইউসুফের সহধর্মিণী স্বর্ণা বিশ্বাসকে কু-প্রস্তাব দেন শাহিন মোল্লা। এতে শাহিনের ওপর ক্ষুব্ধ হন ইউসুফ এবং তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
তিনি বলেন, গত ২৭ জানুয়ারি রাত পৌনে ১০টার দিকে দুই সহযোগী নাজমুল ও হামিকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবসায়ী শাহিনকে নিজের ভাড়া বাসায় নেন ইউসুফ। বরিশাল নগরের রুপাতলী কাঠালতলা তালকুদার হাউজিং প্রথম গলির নাহার ভিলার চতুর্থ তলায় নিয়ে যাওয়া হয় শাহিনকে।
এই র্যাব কর্মকর্তা আরো বলেন, ওই বাসায় নেয়ার পর দুই সহযোগীর সহায়তায় শাহীনের গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন ইউসুফ এবং তার মরদেহ বস্তাবন্দি করে বাথরুমের ফলস্ ছাদের ওপরে লুকিয়ে রাখেন। কেউ না বুঝতে পারে সেজন্য ফলস্ ছাদের দরজা আঠা দিয়ে বন্ধ করে দেন তিনি।
এদিকে শাহীন মোল্লা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তার স্বজন মো. আ. খালেক হাওলাদার ৩০ জানুয়ারি কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পাশাপাশি ৩১ জানুয়ারি শাহীন মোল্লার বোন শিরিন আক্তার মুন্নী র্যাবের কাছে একটি অভিযোগ করেন।
যার ধারবাহিকতায় র্যাব তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। এরইমধ্যে ২ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তারকৃতরা ভিকটিমের পরিবারের কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এ অবস্থায় তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রেপ্তারকৃতদের অবস্থান শনাক্ত করে র্যাব-৮, সিপিএসসি বরিশাল ক্যাম্প।
র্যাব-৮ এর সহাকরী পরিচালক মো. রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে শনিবার রাত পৌনে ২ টার দিকে বরিশাল নগরের এয়ারপোর্ট থানার পশ্চিম ইছাকাঠী, কাশিপুর ও বাকেরগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যার মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাশপাশি মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশের সহযোগিতায় ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় র্যাব।
তিনি জানান, এ ঘটনার সঙ্গে গ্রেপ্তার তিনজন জড়িত ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে। বাকি কেউ জড়িত থাকলে অধিকতর তদন্তে বেরিয়ে আসবে।