1. admin@notunkurisylhet.com : notun :
রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বাহুবলে চা শ্রমিকদের মাঝে কম্বল বিতরণ করলেন আব্দুর রউফ বাহার শান্তিগঞ্জে মহাসিং নদীর ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে তাহিয়া ইটভাটায় মাটি বিক্রির অভিযোগ বাহুবলের বিধান ড্রাইভারের পরলোকগমন হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে আহলে সুন্নাত উলামা পরিষদের সীরাতুন্নবী সা.মহাসম্মেলনে ধর্ম উপদেষ্টা সুনামগঞ্জ বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাট বাজারে ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জে ডিবি পুলিশ কর্তৃক বিদেশি মদসহ ৩ মাদক কারবারি গ্রেফতার বিশ্বম্ভরপুরে বিজিবি’র সহযোগিতায় শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ। আত্রাইয়ে অফসোনিন ফার্মা লিমিটেড এর উদ্যোগে এক দিনের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত নওগাঁয় এক বছর ধরে গাঁজার গাছ পরিচর্যা, অতঃপর আটক আত্রাইয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে এক কৃষি শ্রমিকের মৃত্যু

দেশে ৪০ জেলায় দলীয় নেতাকর্মীর কাছে আতঙ্ক ১৫০ এমপি

নতুন কুড়িঁ নিউজ
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০২২
  • ১৫৪ বার পঠিত

নতুন কুড়িঁ নিউজঃ শুধু সাধারণ মানুষই নয়, দলীয় নেতাকর্মীর কাছেই মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে উঠেছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপিরা)।

 

বিচার সালিশে গিয়ে যেমন স্থানীয় লোকজনকে মারধরের অভিযোগ উঠছে তেমনি দলীয় নেতাকর্মীরাও তাদের হাতে মার খাওয়া থেকে বাদ পড়ছেন না।

 

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৪০ জেলায় দলীয় নেতাকর্মীর কাছে আতঙ্ক হয়ে উঠেছেন প্রায় ১৫০ এমপি।

 

গত শুক্রবার সংসদ ভবনের এলডি হলে এক অনুষ্ঠানে কুমিল্লার এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল মারধর করেন কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে।

 

গত ৭ জুলাই রাজশাহী-১ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী উপজেলার রাজাবাড়ি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে প্রকাশ্যে মেরে আলোচনায় আসেন। যদিও অধ্যক্ষ পরে এমপির পাশে বসে সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেছেন, তারা নিজেরা মারামারি করেছেন।

 

তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা অধ্যক্ষের এই সাফাই নাকচ করে দিয়েছেন।গত ২১ মে বরগুনা-২ আসনের এমপি হাচানুর রহমান রিমন সালিশে এক মাছ ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে মারধর করেন।

 

১৯ মে ঝিনাইদহের এমপি আনোয়রুল আজীম আনার কালীগঞ্জ সরকারি মাহাতাব উদ্দিন কলেজের সহকারী অধ্যাপককে পেটান। গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা-৫ আসনের এমপি কাজী মনিরুল ইসলাম মনুর বিরুদ্ধে ডেমরা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের এক দলিল লেখককে মারধর করার অভিযোগ ওঠে।

 

আওয়ামী লীগের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, রাজশাহী,পাবনা, মাগুরা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, নাটোর, নোয়াখালী, সন্দ্বীপ, গাইবান্ধা, দিনাজপুর সদর, মুন্সীগঞ্জ, মেহেরপুর, যশোর, বরগুনা, বরিশাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, নেত্রকোনা, রাজবাড়ী, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জসহ অন্তত ৪০ জেলায় কখন এমপিদের মারধর বা বাজে আচরণের শিকার হন সেই আতঙ্কে থাকেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

 

ওই নেতারা বলেন, দলের ঘর গোছানোর প্রক্রিয়ায় উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ে চলমান সম্মেলনে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন ওইসব এমপি। চলমান সাংগঠনিক সফরে সম্মেলনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করেও স্থগিত করার ঘটনা যেমন ঘটছে, তেমনি সম্মেলনে মারামারির ঘটনাও আছে।

 

দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা আরও বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যেসব বিদ্রোহী প্রার্থী নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছেন তাদের বড় অংশই আতঙ্ক ছড়ানো এমপিদের আশকারায় মাঠে থেকেছেন।

 

সাংগঠনিক সফরে গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা এ ধরনের নানা অভিযোগ ও অসংগতি পেয়েছেন জানিয়ে দেশ রূপান্তরকে ওই নেতারা আরও বলেন, সংগঠনের ভেতরের বিশৃঙ্খলা, দ্বন্দ্ব-কোন্দল এসবের মূলেই রয়েছে আধিপত্য ও দল নিয়ন্ত্রণের মানসিকতা।

 

নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়েই তারা হয়ে উঠেছেন আতঙ্কের কারণ। আর এই নিয়ন্ত্রণের আরেকটি কারণ হলো সামনে জাতীয় নির্বাচন।

 

সেখানে যারা বর্তমান এমপি তারা সেটা টিকিয়ে রাখতে এবং যারা এমপি পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী তারা এলাকা নিয়ন্ত্রণে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এক্ষেত্রে মারামারির সময় দলীয় নেতাকর্মীও বাদ পড়ছেন না।

 

আওয়ামী লীগের বিভাগীয় পর্যায়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমপিদের কর্মকান্ডের ওপর তারা প্রতিবেদন তৈরি করছেন। এগুলো দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দেওয়া হবে।

 

সাংগঠনিক সফরে যাওয়া দলের সভাপতিমন্ডলীর এক সদস্য আমাদের প্রতিনিধি কে জানান, অধিকাংশ জেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি দলীয় এমপিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। জেলা ও উপজেলা, পৌরসভা বা নগরের রাজনীতিতে এমপির বাইরে দায়িত্বশীল কোনো নেতার নিয়ন্ত্রণ নেই। নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে হিতে বিপরীত অবস্থা তৈরি হয়। এমপির নির্দেশে নেতাকর্মী-সমর্থকসহ দলের সবাইকে উঠবস করতে হয়।

 

ব্যত্যয় ঘটলে রাজনীতিতে থাকাই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, জেলা সফরে গিয়ে তারা এমন অভিযোগও পেয়েছেন যে, এমপির নিয়ন্ত্রণে না থাকলে বাড়িঘরে হামলা,  জেল-জুলুম এমনকি অনেকের দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারও শেষ করে দেওয়ার অপচেষ্টা হয়। এমপির সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়া যাবে না এমন অলিখিত আইনও আছে ওইসব জেলায়।

 

সংগঠনের এমন চিত্র তুলে ধরে বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা ও আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতারা দেশ রূপান্তরকে আরও বলেন, রাজনীতিতে একে অপরের সমন্বয় না থাকা ও নিজ দলের নেতাকর্মীদের কাছে এমপি আতঙ্ক দলকে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল করে দিচ্ছে। সংগঠন অগোছালো হয়ে যাচ্ছে বা আছে, বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে।

 

দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ভয়ভীতি থাকায় সংগঠনের ক্ষতি হলেও ২০১৪ সালের পর থেকে এমপিদের নিয়ন্ত্রণ মেনেই রাজনীতি করছেন পুরনো নেতারা। আর যারা মানতে পারছেন না, তাদের অধিকাংশই মাঠ ছেড়ে ঘরে উঠে গেছেন।

 

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রাজনীতিতে এখন সম্মান নেই। ক্ষমতাই সব। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি মুখে মুখেই।

 

আদর্শের রাজনীতির চেয়ে ক্ষমতার রাজনীতি জনপ্রিয় হয়েছে। ফলে ওয়ার্ডের নেতা মানে না ইউনিয়নের নেতাকে। ইউনিয়ন উপজেলার নেতা মানে না।

 

উপজেলা জেলার নেতা মানে না। সর্বশেষ দেখা যায়, নতুন সংস্কৃতি চালু হয়েছে এমপিরা কাউকে মানেন না। তারা যেটা বলবেন সেটাই শেষ কথা।

 

অবশ্য, সব জেলা একই রকম বলা যাবে না। ’ তিনি বলেন, ‘ধৈর্য-সহ্য ও সহিষ্ণুতা নেই বলেই অনিয়ন্ত্রিত রাজনীতি চলছে। কিছু এমপি আছেন যারা দেশও বিক্রি করে দিতে চান। শেখ হাসিনা একা কতদিক সামাল দেবেন।

 

কুমিল্লার এমপি রাজীর মারধরের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ফজলুর রহমান বলেন, ‘ওই যে রাজনীতিতে এখন সম্মান উঠে যাওয়ার কুফল এটি।

 

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম দেশ রূপান্তরকে বলেন, সবে মাত্র দুই-একটা ঘটনা ঘটেছে। এগুলো ভালো কাজ না, সমর্থনযোগ্যও নয়। যে কাউকে নিয়মশৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে অবশ্যই গঠনতন্ত্র মেনে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, ‘অনেক এমপির মধ্যে সহনশীলতা ও ধৈর্যের অভাব রয়েছে, এই খবর কমবেশি আমাদের কাছে আসে। আমরা মনে করি, যারা এমন মনোভাব পোষণ করেন তারা স্ব-উদ্যোগে শুধরে নেবেন।

 

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এমপি বা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর আচরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাফল্য প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি। ’ তিনি বলেন”কারও আচরণ হিংস্র হয়ে উঠলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

 

অনেক জেলায়ই এমন আচরণ করার মতো এমপি আছেন স্বীকার করে কামাল বলেন, ‘এমপিরা তাদের পদ ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। আবার যারা এমপি নন তারা এমপি মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে দল নিয়ন্ত্রণ করার রাজনীতি করছেন। আবার অনেক পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির এমপি আছেন, তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করারও একটা চক্রান্ত আছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে, ঘটনা সত্য হলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: FT It Hosting