নতুন কুড়িঁ নিউজঃ আইনজীবিদের ভবনগুলো অবৈধ দাবী করে ও আশেপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার ঘোষণা দিয়ে বিতর্কিত হওয়ার পর এবার কোর্ট হিল এলাকায় রিটেইনিং ওয়াল নির্মানে আইনজীবী সমিতি বাঁধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক । আইনজীবি সমিতির দাবী মিথ্যাচার করছে জেলা প্রশাসক।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের দাবী, চট্টগ্রাম কোর্ট হিলে অবস্থিত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও আদালত ভবনে যাওয়ার রাস্তার পাশের গাইড ওয়াল সমূহের সংস্কার, উঁচুকরন, মাটি ভরাটের মাধ্যমে ল্যান্ডস্লাইডিং প্রতিহতকরণ ও ট্রেজারি অফিসের বিপরীতে সম্ভাব্য পাহাড় ধ্বস রোধকল্পে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণে ও মাটি ভরাট করণের কাজে বাধা দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি।
গত সোমবার দুপুর ১টায় জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যগন গণপূর্ত, আনসার ও নির্মাণকাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের কাজ করার সময় বাধা দেয় ও তাড়িয়ে দেয়।
গত জুন মাসের প্রবল বর্ষণের কারণে পরীর পাহাড়ের ৩টি স্থানে পাহাড় ধ্বস হয়।পরীর পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী ও নান্দনিক রিটেইনিং ওয়ালের বেশ কয়েকটি জায়গায় ফাটল দেখা দেয়।এরই প্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, গণপূর্ত বিভাগ, চট্টগ্রাম যুগ্ন জেলা জজ আদালতের নেজারত শাখা, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে একটি বিশেষজ্ঞ দল পরীর পাহাড় এলাকাটির ধ্বসে যাওয়া স্থানসহ অবৈধ ও ঝুকিপূর্ণ স্থানসমূহ পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে এ পরিদর্শক দলটি পাহাড় ধ্বসের স্থানটি পরীর পাহাড়ে ওঠার একমুখী চলাচলের রাস্তাটি এবং ঐতিহ্যবাহী ভবনটি যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য তিনটি পাহাড় ধসের স্থানে আরসিসি পিলার দিয়ে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ ও সংস্কারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেন।
এরই প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার গগণপূর্ত অধিদপ্তর ঝুকিপূর্ণ স্থানে রিটেনিং ওয়াল নির্মাণ কাজ এবং ক্ষতিগ্রস্ত রিটেনিং ওয়ালের মেরামতের কাজ শুরু করলে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ.এইচ.এম. জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে শতাধিক আইনজীবী গণপূর্ত অধিদপ্তরের নিয়োজিত শ্রমিকদের হুমকি ধামকি ও গালিগালাজ করে বিতারিত করে দেন।
একই সাথে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ায়। এতে করে রিটেনিং ওয়াল নির্মান ও সংস্কারের কাজ শুরু করা যায়নি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এএইচএম জিয়া উদ্দীন বলেন জেলা প্রশাসক উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও আদালতের আদেশ অমান্য করে জেলা প্রশাসক পরিবেশ আদালতের সামনে পার্কিং এলাকায় সৌন্দর্য বর্ধনের নামে ইট, বালি, রেখে জায়গা দখল করে জনসাধারণের চলাচলের বিঘ্ন সৃষ্টি করেছিল আমরা আদালতের আদেশ দেখিয়ে পার্কিং এলাকা উন্মুক্ত করার আহবান জানিয়েছি।
আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোহাম্মদ হাশেম বলেন, চট্টগ্রাম কোর্ট হিল এলাকার আইনজীবী সমিতিও একটি অংশীজন, যৌথ অংশীদারদের মধ্যে এক পক্ষকে বাদ দিয়ে অন্য পক্ষ একতরফা ভাবে কোন কিছু করতে পারে না। এখানে জেলা প্রশাসক এক তরফাভাবে সর্বসাধারনের জন্য ব্যবহৃত এলাকা আদালতের আদেশ অমান্য করে দখলে নিতে চাচ্ছে, এটি বাঁধা দিলে তিনি খবরের কাগজে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অযথা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
জেলা প্রশাসন কোর্ট হিলে পাদদেশে যেখানে রিটেইনিং ওয়াল নির্মান করা দরকার সেখানে না করে জনসাধারণের চলাচলের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। আইনজীবী সমিতির সাথে আলোচনা করে পুরো পরীর পাহাড়ে রিটেইনিং ওয়াল দিলে কারো আপত্তি থাকার কথা নয় ।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন,ফায়ার সার্ভিস এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের এসকল রিপোর্টে ঝুকিপূর্ণ স্থাপনা যারা ব্যাবহার করছে তারা এ বিষয়টির সম্যক ধারনা রাখে এবং রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ কাজে বাধা দিয়ে বিজ্ঞ আইনজীবীগণ প্রমাণ করলেন বৈধ ঐতিহাসিক স্থাপনা টিকে থাকুক তারা চায়না।
সরকারী সম্পদ ও জানমালের ক্ষতিতে ও নতুন রিটেনিং ওয়াল নির্মাণে ও ক্ষতিগ্রস্ত রিটেনিং ওয়ালের মেরামতে বাধা সৃষ্টির কারণে ভবিষ্যতে পাহাড় ধ্বস বা জানমালের ক্ষতি হলে এর দায়ভার আইনজীবী সমিতির নিতে হবে।