মোঃ রেনু মিয়া বাহুবল থেকেঃ ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ঘেঁষে হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাহুবল অনার্স কলেজ । কিন্তু সীমানা প্রাচীর না থাকায় কলেজের শিক্ষার্থীরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা যায়, বাহুবল উপজেলার ৪ নং বাহুবল সদর ইউনিয়নের ইসলামপুর মৌজার ১ একর ৪৬ শতক জমিতে ২০০৩ সালে এই কলেজটি স্থাপিত হয় । কলেজে প্রায় আড়াই হাজার ছাত্র ছাত্রী ও ৫৩ জন শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন । কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক, বি,এস, এস পাস ও বি,এস, এস স্নাতক সম্মানের চারটি বিষয় চালু রয়েছে । চারপাশে কৃষি জমির মধ্যে ক্যাম্পাস হওয়ায় এই কলেজে বহিরাগতদের সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। মূল ফটক ও পেছনের বিভিন্ন ফটক দিয়ে ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা ঢুকে পড়ে। এছাড়া রাজনৈাতক প্রভাবেও অনেক সময় বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। প্রায় ১৯ বছর ধরে কলেজ স্থাপিত হলেও এখনো হয়নি সীমানা প্রাচীর নির্মানের কাজ। ফলে আরো অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
বাহুবল কলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহু আগে থেকেই বেশ নাজুক। সাধারণ দিনগুলোতে তো বটেই, এমনকি পাবলিক পরীক্ষার দিনে ও রাতে ক্যাম্পাসে থাকে বহিরাগতদের অবাধ যাতায়াত। কলেজে সীমানা প্রাচীর দেয়াল না থাকায় রাতে জোয়ারের আড্ডা সহ বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপে কিছু লোকজন চলাচল করে। কলেজের মূল প্রবেশ পথ সহ চারপাশেই সীমানা প্রাচীর বিহীন এবং পুরোটাই অরক্ষিত।
বাহুবল কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থীরা বলেন, সবচেয়ে বড় নিরাপত্তাহীনতার ব্যাপারটি হলো ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা প্রাচীর না থাকা। কেউ কাউকে খুন, ইভটিজিং ও ছাত্রীদের সম্মান হানী করে সহজেই কেউ ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যেতে পারবে। অথচ আমরা বহু আগে থেকেই ক্যাম্পাসে সীমানা প্রাচীর দেয়াল দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছি। শুনেছিলাম বহুদিন আগে এর জন্য বাজেটও বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু এখনো ক্যাম্পাসের পুরোটা জুড়ে সীমানা প্রাচীর দেয়া হয়নি।
সরজমিনে বাহুবল কলেজ ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, কলেজের চারদিকে নেই কোন সীমা প্রাচীর দেয়াল। ফলে কলেজটির চারদিকে কৃষি জমি হওয়ায় কলেজ মাঠে গরু, ছাগল, হাস অতি সহজেই প্রবেশ করতে পারে। এছাড়া বৃষ্টির দিনে কলেজে মাঠে পানি উঠে যায় । এতে কলেজে শিক্ষার্থীরা কলেজ মাঠে খেলাধুলা, ও দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত কর্মসূচি পালন করতে অসুবিধা হয় । বৃষ্টির দিনে কলেজের মাঠ যেন কৃষি জমিতে পরিণত হয় যায় । কলেজে চারদিকে সীমা প্রাচীরের দেয়াল না থাকায় দিনে রাতে সহজেই বহিরাগত কলেজে প্রবেশ করতে পারে । চারদিকের মধ্যে এক দিকের জন্য ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ মঞ্জুর হলেও এখনো কোনো কাজের সুরাহা পাওয়া যায় নি ।
এ ব্যাপারে বাহুবল কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রব শাহীন বলেন, “কলেজের নিরাপত্তা বজায় রাখতে আমরা সবসময় সচেষ্ট। কলেজে চারদিকে সীমা প্রাচীর দেয়াল নির্মাণ না থাকায় দিন ও রাতে বহিরাগত ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারে। আমরা চেষ্টা করি বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকানোর। এছাড়া কলেজের সীমানা প্রাচীর সম্পর্কে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও কলেজের সভাপতি উপজেলা প্রশাসন কে অবগত করার পর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ মঞ্জুর হয় । যে বরাদ্দ আসছে সেটা শুধু চারদিকের মধ্যে এক পাশের জন্য বরাদ্দ । বাকি তিন পাশেই খোলা অবস্থায় পড়ে থাকবে । এতে কলেজে বহিরাগতদের প্রবেশ সম্পন্ন ভাবে বন্ধ সম্ভব হবে না । দ্রুত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য কলেজে চারদিকের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা জরুরি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজে সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহুয়া শারমিন ফাতেমা মটো ফোনে কয়েক বার দেওয়ার পর ফোন রিসিভ হয়নি ।