অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন দৈনিক দেশ রুপান্তর জেলা প্রতিনিধি শোয়েব চৌধুরী।
সোমবার (৩০ মে) সন্ধায় ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ৫টি ক্যাটাগরিতে ১১ জন সাংবাদিককে পুরস্কৃত করা হয়। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় ঢাকার বাইরে একমাত্র শোয়েব চৌধুরীই পুরুস্কার লাভ করেন।
এছাড়া সাংবাদিকতার প্রসারে ভূমিকা রাখার জন্য প্রতিটি জেলা থেকে একজন করে ৬৪ জন সাংবাদিককে দেওয়া হয় বিশেষ সম্মাননা। হবিগঞ্জ জেলা থেকে প্রবীণ সাংবাদিক ইসমত চৌধুরী পেয়েছেন গুণীজন সম্মাননা লাভ করেন।
কমিটি সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবারের মতো এ আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধ, অপরাধ ও দুর্নীতি, নারী ও শিশু ক্যাটাগরির প্রতিটিতে প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমের সেরা তিনটি করে প্রতিবেদনের জন্য মোট ৯ জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
অনুসন্ধানী প্রামাণ্যচিত্র ও আলোকচিত্রের জন্য পুরস্কার দেয়া হয় দুজনকে। প্রত্যেক বিজয়ীরা পেয়েছেন আড়াই লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সনদপত্র।
গত বছরে হবিগঞ্জে শিল্প দুষন নিয়ে সাংবাদিক শোয়েব চৌধুরীর তিনটি ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হয় দৈনিক দেশ রূপান্তরে।
প্রতিবেদনে শুধু শিল্প দুষনের চিত্র ফুটে উঠেনি একই সাথে দুষনের শিকার জনগনকে বিক্ষোভ দমানোর নামে শিল্প মালিকদের নিকট থেকে কতিপয় জনপ্রতিনিধি ও নেতাদের অর্থ কামাইয়ের বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
বিএ পাশ করার পর ৮০’র দশকে চাচা সাংবাদিক নোমান চৌধুরীর সম্পাদনায় সাপ্তাহিক দৃষ্টিকোন এর মাধ্যমে শোয়েব চৌধুরীর সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি।
প্রায় তিন যুগের সাংবাদিকতায় তিনি বিভিন্ন সময়ে ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সমাচার, আজকের কাগজ,বাংলাবাজার পত্রিকা, যুগান্তর, সমকাল ও চ্যানেল টুয়েন্টিফোরে হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি ২০০৯ সালে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ২০১৫ সালে সভাপতি নির্বাচিত হন।
দৈনিক প্রভাকর এর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করার সময় একটি সংবাদের কারনে তাকে কারাবরণ করতে হয়েছে।
সাংবাদিকতা ছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথ জড়িত। পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার কোষাধ্যক্ষ শোয়েব চৌধুরীর স্ত্রী শামীম পারভীন হবিগঞ্জ বারের সদস্য। তাদের রয়েছে দুই সন্তান।
তৃণমূল সাংবাদিকতায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৬৪ জন বিশেষ সম্মাননা প্রাপ্তদের প্রত্যেকে নগদ এক লক্ষ টাকা, সম্মাননা স্মারক ও উত্তরীয় পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানটি প্রবীণ ও নবীন সাংবাদিকদের মিলনমেলায় রূপ নেয়।বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড প্রদান উপলক্ষে স্মরণিকা প্রকাশ করেছে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড। একই অনুষ্ঠানে স্মরণিকাটির পাঠ-উন্মোচন করেন অতিথিরা।
স্মরণিকায় ৬৪ জন প্রবীণ ও গুণী সাংবাদিকের সংক্ষিপ্ত জীবনালেখ্য, পুরস্কার পাওয়া ১১ জন সাংবাদিকের পরিচিতি, জুরিবোর্ডের সদস্যদের বিশেষ বক্তব্যসহ ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত কিছু বিশেষ প্রতিবেদন রয়েছে।
বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২১’ আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম ও ‘বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২১’-এর জুরিবোর্ডের প্রধান অধ্যাপক মো. গোলাম রহমান। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করবেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও চিত্রনায়িকা বুবলি।
আয়োজক কমিটি জানায়, আটজন গুণী ব্যক্তিত্বের সমন্বয়ে গঠিত জুরিবোর্ড দেশের সেরা অনুসন্ধানী সাংবাদিক নির্বাচিত করেছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের অনেক সাংবাদিক তাঁদের সেরা প্রতিবেদনগুলো জমা দেন। জুরিবোর্ডের সদস্যরা সেগুলোর গুণমান যাচাই-বাছাই করে সেরা প্রতিবেদন নির্বাচিত করেছেন।
জুরিবোর্ডের প্রধান অধ্যাপক গোলাম রহমান বলেন, বস্তুনিষ্ঠ ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা উৎসাহিত করার প্রত্যয়ে এ ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ সাধুবাদ পাওয়ার দাবি রাখে।
তিনি বলেন, ‘অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় শ্রেষ্ঠত্ব নির্বাচনের কাজটি ছিল খুবই কঠিন। পুরস্কার পাওয়ার মতো অগণিত প্রতিবেদন জমা পড়ে। সেরা প্রতিবেদনটি বাছাই করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে। সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয়টি হলো শতভাগ নিরপেক্ষতা ও যৌক্তিক বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে সেরা প্রতিবেদন নির্বাচন করেছি আমরা।
অধ্যাপক গোলাম রহমানের নেতৃত্বে জুরিবোর্ডে ছিলেন সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, টিভি টুডের প্রধান সম্পাদক মনজুরুল আহসান বুলবুল, দৈনিক দেশ রূপান্তরের সম্পাদক অমিত হাবিব, আলোকচিত্রী ও লেখক নাসির আলী মামুন, শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাওন্তী হায়দার এবং সাংবাদিক জুলফিকার আলি মানিক।