নবীগঞ্জ প্রতিনিধি” হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে ছাত্রীর সাথে ইভটিজিং এর প্রতিবাদ করায় ৩ কলেজ ছাত্রের উপর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন ও বেপরোয়া হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এতে গুরুতর আহত জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের গোতগাঁও গ্রামের রফিকুল ইসলামের পুত্র ডিগ্রী প্রথম বর্ষের ছাত্র হাবিবুর রহমানকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অন্য আহত ছাত্র তোফায়েল ও আলকাব হোসেনকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
কলেজ ও প্রত্যক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানা যায়, ২ এপ্রিল শনিবার দুপুরে ডিগ্রী প্রথম বর্ষের ছাত্র হাবিবুর রহমান ও তার সহপাঠী তিন বন্ধু তোফায়েল,আলকাব ও এক ছাত্রী কলেজ ক্যাম্পাসে বসা ছিলেন।
এ সময় ডিগ্রী ফাইনাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কলেজ থেকে বের হয়ে যাওয়া বহিরাগত ছাত্র সাইন বোর্ড এলাকার সুহেল আহমেদ বসা ওই ছাত্রীর সাথে অঙ্গভঙ্গি করে ইভটিজিং করে। এ সময় হাবিবুরসহ তার অপর দুই বন্ধু এর প্রতিবাদ করেন।
এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে ইভটিজার সুহেলের পক্ষ নেয় মোস্তফাপুর গ্রামের জানু মিয়ার পুত্র কলেজ ছাত্র সজীব,আদিল,সাহান,নিয়াজ,জাহানসহ ৫০/৬০ জন ছাত্র। এর মধ্য বহিরাগতরাও ছিল। শুরু হয় হাবিবুর রহমানসহ ৩ জনের উপর এলোপাতাড়ি হামলা।
প্রতি একজনকে মারপিট করেছে ১৫/২০ জন করে। আবার ১০/১২ জন দাঁড়িয়ে সে দৃশ্য দেখেছে। এক পর্যায়ে ৩ জনকে কলেজের অফিসে নিয়ে গিয়ে ইচ্ছা মতো পিঠানো হয়।কলেজে থাকা শিক্ষকরা হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
শিক্ষকরা হামলা থামাতে প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন। কিন্ত হামলাকারীদের কাছে ছিলেন তারা অসহায়।এসব অবাধ্য সন্ত্রাসী ছাত্ররা শিক্ষকদেরও নাজেহাল করেছেন।
প্রায় ৩০/৪০ মিনিট হামলার ঘটনা ঘঠেছে কিন্ত থামানোর কেউ ছিলনা। কলেজে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্য তখন আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
তারা দ্বিগ্ববিদ্বিগ ছুটাছুটি করতে থাকে। পরে হামলাকারীরা ইচ্ছামতো পিঠিয়ে বীরদর্পে কলেজ ক্যাম্পাস ত্যাগ করে।এর পরই খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে ছুটে যান একদল পুলিশ নিয়ে ইনাতগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ কাওসার আহমেদ।
এতে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ইনাতগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে ৫ মিনিটের দুরুত্ব কলেজ ক্যাম্পাস। কিন্ত প্রশাসনের লোকজন খবর দিলেও যথা সময়ে ঘটনা স্থলে যাননি এটা দু:খজনক।
প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্র আতাউর রহমান জানান,আমার ২০ বছরের জীবনে এমন হামলার ঘটনা আমি কখনোই দেখিনি। হামলা হবে ঠিক থামানোর মানুষওতো থাকতে হবে। এমনটা চোখে পড়েনি। একতরফা মধ্যযুগীয় কায়দায় পিঠানো হয়েছে।
আহত হাবিবুর, তোফায়েল ও আলকাব জানান এমন হামলায় আমাদের পূণ:জন্ম হয়েছে। হামলাকারীরা স্থানীয়। ইভটিজিং করবে আবার প্রতিবাদ করলে হত্যার উদ্যোশ্যে হামলা করবে।
এমন পরিস্থিতি হলে বাহির থেকেতো শিক্ষার্থী আসবেনা। তারা হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ইনাতগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ কাওছার আলম বলেন খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল নুরুল আমিন অধ্যক্ষ্য ছুটিতে রয়েছেন জানিয়ে বলেন,হামলার ঘটনাটি দু:খজনক। আমরা শিক্ষকরা থামানোর চেষ্টা করেছি। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন বলেন ঘটনাটি দুঃখজনক। কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা আসার কোন সুযোগ নাই। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।