নতুন কুড়িঁ নিউজ” লক্ষ্মীপুরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চুরির অপবাদ দিয়ে মো. ফারুক ও মো. হারুন নামে দুই যুবককে নির্দয়ভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। এর মধ্যে বিধবা মায়ের সামনেই ফারুককে মধ্যযুগীয় কায়দায় পেটানো হয়।
এ সময় অলিখিত কাগজে সই নিয়ে ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ, না হয় এলাকাছাড়া করার হুমকি দেওয়া হয়।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সহিদুল ইসলাম ওরফে সুমন বিন তাহের পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ। তিনি লক্ষ্মীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক।
সোমবার দুপুরে ফারুকের মা আয়েশা বেগম কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর আগে রোববার সন্ধ্যায় নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
আহত ফারুক লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাঞ্চানগর এলাকার কালাগাজি বাড়ির মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে ও হারুন একই এলাকার রিকশাচালক আবু মিয়ার ছেলে। তারা পেশায় শ্রমিক। ফারুকের গালে ও পিঠে লাঠিসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন জানায়, সম্প্রতি ওই এলাকায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চুরি হয়। রোববার সন্ধ্যায় সন্দেহজনকভাবে ফারুক ও হারুনকে ডেকে আনে কাউন্সিলর সুমন। এ সময় রিকশা চুরির অপবাদ দিয়ে ফারুক ও হারুনের কাছ থেকে জোরপূর্বক অলিখিত কাগজে টিপসই নেয়। এর আগে তাদেরকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্দয়ভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়।
বিধবা আয়েশা বেগম তার ছেলেকে রক্ষা অনুনয় বিনয় করলেও কাউন্সিলর তা কানে তোলেননি। এক পর্যায়ে কাউন্সিলর ৫০ হাজার টাকা দিতে বলে। টাকা না দিতে পারলে এলাকাছাড়া করার হুমকি দেয়। পরে আহত অবস্থায় ফারুক ও হারুনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ফারুকের ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার ভাই কাজ থেকে ফেরার পথে চোর সন্দেহে কাউন্সিলর ডেকে নেয়। পরে কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্ট এলাকায় কাউন্সিলর সুমন তার অফিস দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে তাকে লাঠি, বাঁশ, জিআই তার দিয়ে অমানবিকভাবে পিটিয়েছে। আমার ভাই কোনো চুরি করেনি। বিনা কারণে তিনি অবিচার করেছে।
কাউন্সিলর সহিদুল ইসলাম বলেন, আমি মারধর করিনি। রিকশা চুরির অপরাধে এলাকার লোকজন তাদেরকে মেরেছে।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। তাদের মারধর করলেও তা ঠিক হয়নি। কাউন্সিলরকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া অপরাধ।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, রাতেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।