ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতার জন্য বিএনপিকে দায়ী করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিএনপি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের ওপর ভর করে মারামারি, হানাহানি সৃষ্টি করেছে।
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি ঘোমটা পরে প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করছে। তারা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীদের আশ্রয় করে মারামারি করছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে উপস্থিতি সর্বোচ্চ ছিল। একজন কমিশনারও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। নির্বাচনে পার্টিসিপেশন মূল কথা। এবারের নির্বাচনে রেকর্ড পার্টিসিপেশন হয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন এ দেশে কখনও শান্তিপূর্ণ হয়নি। তবে এতে শেখ হাসিনা সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি—কেউ অপরাধ করে পার পাবে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তৃণমূল থেকে অনেক সময় ভুল নাম আসে। কখনও কখনও বিভিন্ন প্রভাবের কারণে সংস্থার রিপোর্টও প্রভাবিত হয়, ভুল আসে। ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার সৎসাহস আওয়ামী লীগের আছে। আমরা ভুলগুলো খুঁজে বের করে সতর্ক হচ্ছি।
তিনি বলেন, ‘সরকারের পতন হবে জনগণের ইচ্ছায়। বিএনপির ইচ্ছায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বসেনি। জনগণ চাইলে চতুর্থবারও আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু কন্যা ক্ষমতায় থাকবেন।
আওয়মী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বেপরোয়া গাড়ি যেমন এক্সিডেন্টের কারণ, বেপরোয়া পথচারীও এক্সিডেন্টের জন্য দায়ী। মোটরসাইকেল চলকরাও দিগ্বিজয়ী আলেকজান্ডারের মতো ছুটছে তো ছুটছেই। এরাও এক্সিডেন্টের জন্য দায়ী। সড়ক পরিবহন আইনে কোনও শিথিলতা আসছে না।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ‘গণপরিবহনে হাফ ভাড়া আগে থেকেই কার্যকর ছিল। মাঝে শিথিলতা দেখা গেছে। সরকার বিআরটিসি বাসে ছাত্র-ছাত্রীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের অনুরোধে বেসরকারি বাস মালিকরা হাফ ভাড়ার সিদ্ধান্ত আজ সংবাদ সম্মেলনে দেবে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে নতুন কোনও সিদ্ধান্ত নেই বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘তারা সাত বছর ধরে মামলা পিছিয়েছে, পরে দণ্ডিত হয়েছে। বিচার বিভাগ স্বাধীন। রায় মানতে হবে, আইন মানতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বিবেচনা করে খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ স্থগিত করে বাসায় থাকতে দিয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসা করতে দিয়েছেন। এর চেয়ে বেশি বিএনপি কীভাবে আশা করে।
সভায় বিজয় দিবসে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে বিজয় র্যালি হবে। ভারতের রাষ্ট্রপতি ১৭ ডিসেম্বর জাতীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন, আলোকসজ্জাসহ মাসব্যাপী কর্মসূচি থাকবে। সহযোগী সংগঠন আওয়ামী লীগের কর্মসূচির সঙ্গে মিলে নিজস্ব কর্মসূচি নেবে। ব্যানার ফেস্টুন যাতে শুধু আত্মপ্রচারের জন্য না হয়। দলের নামে পোস্টার, ব্যানার, বিলবোর্ড করেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ফারুক খান, আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ প্রমুখ।