স্টাফ রিপোর্টার: বাহুবলে বোনের সাথে অন্তরঙ্গ মূহুর্তেের দৃশ্য দেখে ক্ষুদ্ধ হয়ে পরিকল্পিতভাবে স্কুল ছাত্রকে হত্যার দায়ে শামীম (২২) কে ১০ বছরের দণ্ডাদেশ প্রদান করা হয়েছে। ৩০ অক্টোবর বুধবার অপরাহ্নে এ দণ্ডাদেশ প্রদান করেন হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল -১ এর বিচারক। দন্ডিত আসামি শামীম বাহুবল উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের খোজারগাও গ্রামের আমির আলীর ছেলে।
অপর দুই আসামির মধ্যে একই গ্রামের জৈন উল্লার ছেলে জুয়েল মিয়াকে ও ইউনুস আলীর ছেলে শাহজাহান মিয়াকে সমাজসেবা কার্যালয় থেকে বয়স নির্ধারণের সনদ প্রদান করার নির্দেশ দেন আদালত। মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, দন্ডিত আসামী শামীম তার বোনের সাথে প্রতিবেশী আব্দুল হান্নানের ছেলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র হাবিবুর রহমানকে দেখতে পেয়ে ক্ষুব্ধ হয় এবং প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুজতে থাকে। এক পর্যায়ে মাসেক পর ২০১৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী দিন গত রাতে তার সহযোগী শাহজাহান ও জুয়েলকে দিয়ে পাশ্ববর্তী বানিয়াগাও তাফসির মাহফিলে নিয়ে যায়।
রাত ৯ টার দিকে বাড়ি ফেরার সময় বেন্দারবন্দ হাওরে সেলু ঘরের কাছে হাবিবুর রহমানকে ঝাপটে ধরে শামীম, শাহজাহান ও জুয়েল। এ সময় গলাটিপে এবং লিঙ্গ কেটে হত্যা করে হাবিবুরের লাশ জমিতে ফেলে বাড়ি চলে যায় তিনজন। কিন্তু রাতে বাড়ি না ফেরায় হাবিবুরের স্বজনরা শামীম, শাহজাহান ও জুয়েলকে জিজ্ঞেস করলে তার সঠিক কোন তথ্য দেয়নি তারা। পরদিন সকালে হাওরের জমিতে হাবিবুরের লাশ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে বাহুবল মডেল থানার তৎকালীন ওসি মোঃ মাসুক আলী ও এসআই মহরম আলী সহ একদল পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। ওইদিন বিকেলে এএসপি নাজিম উদ্দীন এবং ওসি মাসুক আলী হত্যার রহস্য উদঘাটনে ওই গ্রামে যান এবং ঘটনার প্রায় ৯ ঘন্টার মাথায় ঘাতক শামীম এবং তার অপর দুই সহযোগী শাহজাহান ও জুয়েলকে আটক করে জিজ্ঞাসাদ করেন।
এসময় তারা হত্যাকান্ডের ব্যাপারে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে হবিগঞ্জে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেয় শামীম। প্রায় তিন বছর পর তিন আসামি হাইকোর্ট থেকে জামিন লাভ করে। এদিকে মাত্র কয়েক মাসের মাথায় মামলার আইও এসআই মহরম আলী শামীম, শাহজাহান ও জুয়েলকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বুধবার উপরোক্ত রায় প্রদান করেন।
এদিকে রায় ঘোষণার পর আসামি শামীমের মা ও তার ভাই মামলার বাদি আব্দুল হান্নানকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিলে উত্তেজনা দেখা দিলে কোর্ট পুলিশ উভয় পক্ষকে সরিয়ে দেয়।