এফ আর হারিছ, বাহুবল থেকেঃ আজ থেকে প্রায় ২০/২৫ বছর পূর্বে বাহুবল উপজেলার পুটিজুরী ইউনিয়নের রাজসূরত গ্রামের মৃত মনজব উল্লার পুত্র আব্দুর রউপ অভাবের তাড়নায় সকল সহায় সম্ভল বিক্রি করে ইউনিয়নের নোয়াঐ গ্রামে বিয়ে করে ঘর জামাই হিসেবে সেখানেই বসবাস করে আসছেন । নিজে প্রতিবন্ধি হওয়ার কারনে ক্ষমতানুসারে শ্বশুর বাড়ি থেকে অন্যের জমিতে কাজ করেই সংসার চালাতেন আব্দুর রউপ।
২০০৫ সালে হঠাৎ বেশি অসুস্থ হয়ে যাওয়ার কারনে কোনো কাম কাজ করতে না পারায় অভাব যেনো তাদের পরিবারেরই সদস্য হয়ে উঠে। এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানকে নিয়ে তখন অতি কষ্টে দিন কাটান তিনি।
পরে ২০০৬ সালে পুটিজুরী ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান মোঃ মুদ্দত আলী তাকে একটি প্রতিবন্ধি কার্ড করে দেন, তখন প্রতিবন্ধি ভাতা আর ভিক্ষা করেই ৪ জনের জীবন চলতো। কিন্তু কার্যত লকডাউনের কারণে এখন দুবেলা দুমুঠো খাবার জোগাড় করাও মুশকিল হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে তার প্রতিবন্ধি ভাতাও কয়েকমাস যাবৎ পাচ্ছেন না।
ভাতা পাবেন কিনা তাও জানেন না। ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও এর কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। আব্দুর রউপ এর বয়স এখন ৬২ বছর চলছে। তার ছেলের বয়স ১২/১৩ বছর হবে। গত ২ বছর পূর্বে গাছ থেকে পড়ে তার ছেলের একটি হাত ভেঙ্গে যাওয়ার কারনে বর্তমানে দুজনেই প্রতিবন্ধী। কার্যত লকডাউন ও অসুস্থার কারণে বাহিরে বেরোনো বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাদের। অসহায় হয়ে শ্বশুর বাড়ির একটি ঝুপড়ি ঘরেই দিন কাটাচ্ছেন তারা।
এ বিষয়ে পুটিজুরী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, এবার পরিষদে ১২৭টি বয়স্ক ভাতার কার্ড বাতিল হয়েছে।
এ তালিকায় তার নাম আছে কিনা তা দেখতেছি। স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার এনামুল হক বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়ে ১ মাস হয়ে গেলেও তার দেখার আর শেষ হলনা। এমন্তাবস্তায় অভাব অনটনে প্রতিবন্ধি আব্দুর রউপ এর জীবন শেষ হয়ে যাবার উপক্রম।
এ ব্যাপারে প্রতিবন্ধি বৃদ্ধ আব্দুর রউপ জানান, তিনি ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সরকারী কোনো সহায়তা পান না। মেম্বারের কাছে গেলে মেম্বার আগামি মাসে নাম দিবে,
পরের মাসে নাম দিবে বলে দিন ঘনিয়ে যাচ্ছে। তবে মেম্বার এনামুল হক বলেন, সে মিথ্যে বলেছে, আমি মাজে মধ্যে তাকে ১০ কেজি ২০ কেজি করে চাল দিচ্ছি। তাছাড়া তার স্ত্রীর নামে ১০ টাকা কেজি চালের একটি কার্ড আছে।
বাহুবল উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার আব্দুর রউপ এর প্রতিবন্ধি ভাতার বিষয়টি লকডাউনের পরে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। বর্তমানে অভাব নামক দানবের হানায় তিলে তিলে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে আব্দুর রউপ এর পরিবার।