সময়ের গল্প কষ্টের বেড়াজালে আক্ষেপ
সাঈদ আহমদ,,,
রিফা খুব অসুস্থ। আহমেদ জামিল তার সহপাঠি। একই হাইস্কুলে পড়াশুনা করেছেন। তবে জামিল এক বছরের সিনিয়র।
আজ রিফার সাথে সাক্ষাতে যা জানলাম।
রিফা অতীতের বাস্তব গল্পটি আমার সাথে শেয়ার করলেন। তিনি এক আলাপ চারিতায় বললেন- স্কুল জীবনে আহমেদ জামিল (৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত) আমাকে সব সময় লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতো।
আমার দিকে শুধু শুধু তাকিয়ে থাকতো।
স্কুলে এসেই যেন আমাকে দেখাই যেন তার তৃপ্তি। একদিন আমি জামিলকে বারণ করেই ফেললাম। যাতে আমার দিকে আর না থাকায়।
২০১৪ সালে এসএসসি পাশ করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির সুযোগ পেল জামিল। ৬ বছর পর ডাক্তার হয়ে বের হলো। এবার সে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই সময়ে ঢাকার “আমার হাসি” নামক একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চাকুরি নিল জামিল।
আমি (রিফা) তখন খালার বাসায় ঢাকায় বেড়াতে যাই। এক সপ্তাহ হয়ে গেল। একটু একটু জ্বর জ্বর ভাব। খবর পেয়ে ছোট ভাই ছায়েফ খালার বাসায় আসলো। পরদিন তাকে নিয়ে “আমার হাসি” ক্লিনিকে গেলাম।
ডাক্তারের চেম্বারে গেলাম। ডাক্তার (জামিল) আমাকে দেখলেন। ভিজিট ৬শ টাকা দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। আর তখনই মনে পড়ে গেল হাইস্কুল জীবনের স্মুতি কথা।
মনে পড়ল, যে ছেলেটি স্কুল জীবনে লুকিয়ে লুকিয়ে আমাকে দেখতো। সব সময় আমার দিকে তাকিয়ে থাকতো। যে কারণে তাকে নিষেধ করেছিলাম। সে আজ ডাক্তার। আমাকে দেখার জন্য আমি নিজেই তার কাছে যাই।
শুধু তাই নয়, আমাকে দখতে হলে উল্টো আমি তাকে টাকা দিতে হচ্ছে। আমাকে দেখার জন্য সে এখন আমার কাছ থেকে ভিজিট নেয়। অথচ আমাকে দেখার কারণে আমি তাকে নিষেধ করেছিলাম। সময়ে পরিবর্তন।
রিফার দৃষ্টিতে তাকে দেখাই যেন আহমেদ জামিলের অপরাধ। খুব কষ্ট এবং লজ্জা পেয়েছিল রিফার নিষেধে। রিফাকে সে মন থেকে ভালবাসতো।
সেই দিন থেকেই জামিলের সংকল্প ছিল, আমি রিফাকে দেখাই অপরাধ। আমি সেইদিনের অপেক্ষায় থাকবো, যেদিন রিফা নিজেকে দেখানোর জন্য আমার কাছে আসবে। ধন্যবাদ।